গুচ্ছ কবিতা

বেলাশেষের গান
ন্যুজ্ব শরীরে সকালের রোদ
সাদা চুলের ভাঁজে নিখাদ কবিতা
শীর্ণ হাতে উষ্ণ নির্ভরতা
বার্ধক্য হৃদয়ে ঘুমভাঙানির গান।
যুগের দিয়াশলাই ঘষে
ক্ষয়িষ্ণু চোখের প্রজ্জ্বলিত ফায়ারপ্লেস
তবু চামড়ার বলিরেখায়
বেলাশেষের গান।
২/
নিষিদ্ধ প্রেম
শোবার ঘরে কুনোব্যাঙের বাস
রাতগভীরে দম্পতির রোমাঞ্চে
উষ্ণ এক মধুকর ব্যাঙ -
পরব্যাঙানীর হাত ধরে লুকিয়ে
খড়ের গাদা,গোয়ালঘর।
দ্বিজাতিতত্ত্বের চক্রে এক তরুণ কোলাব্যাঙ
কষ্টি না মেলা নিষিদ্ধ প্রেমে
আজও জলে মুখ ডুবিয়ে কাঁদে।
বিলের জলে, কচুরিপানার আড়ালে
জলডাঙার মিলনের অপেক্ষায়
তরুণী কুনো জেগে।
৩/
পৃথিবীর কালো
দুধসাদা চতুর্ভুজি টাইলস
নব্বই ডিগ্রী কোণে পৃথিবীর কালো
হারপিকের গুঁড়োয় শক্ত ব্রাশ
ঘষে ঘষে ব্রাশেরা ক্লান্ত
হারপিকেরও তেজ ক্ষয়ে
চৌকোণা টাইলসে ব্যাকটেরিয়ার আবাস
তিনশষাট ডিগ্রী কোণ ধরে জীবাণুর উল্লাস
তবু পাবলিক টয়লেটের গন্ধে
পেটের মোচড় ধরা মানুষের লাইন।
৪/
টাকা
টাকা পেলে জমির চাচার
পাকা দাড়িয় লাল আগুন
টাকা থাকলে পটলার নানীর
ঢিলে চামড়ায় চির ফাগুন
টাকা থাকলে রাজাসনে
মনবাগানের মালী
পায়ের কাছে ধীরে
রাজা পতৎবৃত্তি।
৫/
কালপুরুষ
যুগবেদনার রথে
উদ্ভ্রান্ত সময় ঘোড়া
গলঘণ্টের ধ্বনিই
ইতিহাসের চোখ মেলা।
গান্ধী-সুভাষ-মুজিবের
চেতনার আগুনে
এক কল্পিত কালপুরুষ
চোখের বারুদে পোড়ে অপকাল।
মানচিত্রের আগুন পথে
শহীদ জননী, বঙ্গমাতার
বিসর্জনের সত্যে
নিভৃতে অসুরের আত্মহনন।