এক হার না মানা কোম্পানির গল্প

Sep 19, 2024 - 21:30
Sep 19, 2024 - 23:24
 0  10
এক হার না মানা কোম্পানির গল্প
এক হার না মানা কোম্পানির গল্প

সাল ২০১৮,মার্কিন সরকারের প্রভাবে চিনা টেক জয়েন্ট হুয়াওয়ের ডেপুটি চেয়ারওম্যান MENG WANZHOU কে আটক করে কানাডা পুলিশ।গ্রেফতার হওয়া মেয়ে কেবল হুয়াওয়ের একজন ঊর্ধ্বতর কর্মকর্তাই নয় বরং তিনি HUAWEI এর প্রতিষ্ঠাতা রেন জেন সিং এর মেয়ে,যাকে চিনে ডাকা হয় প্রিন্সেস অফ হুয়াওয়ে বলে।

তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তিনি ইরানের উপর আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে ফাঁকি দিয়ে হুয়াউয়ের ব্যবসা সম্পর্কে আমেরিকান ব্যাংকগুলোকে মিথ্যে বলেছিলেন।যদিও মিস মেং এবং হুয়াওয়ে উভয়েই সেই অভিযোগ অস্বীকার করে।

ঘটনার শুরু ঠিক এখন থেকে....

একটি কোম্পানিকে কেন্দ্র করে মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে দুই পরাশক্তি,মুখোমুখি কেবল নয় হুয়াওয়েকে নিয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বিবাদ ছিল নতুন পৃথিবীর এক নবীন যুদ্ধ "

Tech War "

হুয়াওয়ে এর লাগাম টেনে ধরতে যুক্তরাষ্ট্রের যাবতীয় পদক্ষেপ শুধুমাত্র অর্থনীতি ও জাতির নিরাপত্তার স্বার্থেই নয় প্রযুক্তি ক্ষেত্রেও এটা দুই পরাশক্তির লড়াই ছিল।

বাংলাদেশের নেটওয়ার্ক সিস্টেমের তৈরি হওয়ার পিছনেও রয়েছে হোয়াওয়ের কৃতিত্ব। এক সময় গিয়ে তারা তাদের প্রথম স্মার্টফোন বাজারে ছাড়ে।বাজার বুঝে এবং প্রতিযোগিতা মূলক দাম নির্ধারণের কৌশল হুয়াওয়ে কে খুব দ্রুত জনপ্রিয় করে তোলে।তত দিনে হুয়াওয়ে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহৎ স্মার্টফোন নির্মাতা কোম্পানি হয়ে ওঠে।বিশ্বজুড়ে ১৬% শেয়ার নিয়ে মার্কেট রাজত্ব করে হুয়াওয়ে।২০১৭ সালের দিকে হুয়াওয়ে স্মার্টফোন মার্কেটের শীর্ষে অবস্থান করে।এমন সময় হুয়াওয়ে নিয়ে আসে তাদের সাব ব্র্যান্ড honor।এবং যথাযথ ভাবে এটিও খুব তাড়াতাড়িই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এশিয়া সহ ইউরোপ কান্ট্রিগুলোতে।সব মিলিয়ে হুয়াওয়ে ও honor এর এই যুগলবন্দী যেন হয়ে ওঠে টেক জায়ান্ট অ্যাপলের সব চেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী। 

সবকিছু মিলিয়ে যখন তাদের কোম্পানি দ্বিতীয় বৃহৎ টেক জায়ান্ট হয়ে ওঠে,বিপদের আবির্ভাব ঠিক তখনই ঘটে..

চিনা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে কে আটকাতে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।তৎকালীন ট্রাম প্রশাসন হুয়াওয়ে কে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকির স্বরুপ মনে করে।চিন হুয়াওয়ে এর প্রযুক্তি দ্বারা তাদের উপর নজরদারি করছে বলে অভিযোগ করা হয়।অনেক চেষ্টা করেও হুয়াওয়ে এই  অভিযোগের বিরুদ্ধে শক্ত কোনো প্রমাণ দিতে পারে নি। এ সময় হুয়াওয়ে এর 5G প্রযুক্তি ব্যবহারেও নিষেধাজ্ঞা জারি করে বেশীরভাগ কোম্পানি।এটি যেন ছিল হুয়াওয়ে এর জন্য এক বড় ধাক্কা! এমন কি tsmc আর হুয়াওয়ে এর নিজস্ব চিপসেট kirin  ডিজাইন করতে চায়না।ফলে ২০১৯-২০২৩ প্রযন্ত তাদের 4G ফোনই বানাতে হয় ।তাদের ফোনের সেল একধাক্কায় অর্ধেক হয়ে যায়।ফলে বাধ্য হয়ে তাদের উৎপাদন কমিয়ে দিতে হয়।তারা চায়নায় তাদের চিপসেট তৈরি করে।এবং চায়নায় তাদের সব কিছু কমপ্লিট করা হয়।যদিও এখনও তারা 7nm এর চিপসেট তৈরি করে।তবুও তাদের চেষ্টা কিন্তু থেমে নেই!!!এবং তারা যে শুরু থেকেই টেক দুনিয়ায় ক্রিয়েটিভ সেটা তারা তাদের 100x জুমিং এর মাধ্যমে অনেক আগেই দেখিয়ে দিয়েছে।যা এখন স্যামসাং ফোনের মূল আকর্ষণ।এখনো হুয়াওয়ে একের পর এক আশ্চর্য ইনভেনশন করে থাকে।যেটা আপনি তাদের p অথবা mate সিরিজে দেখতে পাবেন।আপনি চাইলে এগুলো চেকও করতে পারেন।DXo mark নামের একটা ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে ক্যামেরা রেটিং করা হয় সেখানে হুয়াওয়ে এর ফোন ১ নম্বর এবং জনপ্রিয় iPhone এবং samsung তার অনেক পরে।এবার একর ভেবে দেখুন তো যদি আজ বিশ্বের মার্কেটে Huawei তাহলে কি এসব টেক জায়ান্টদের খুঁজে পাওয়া যেতো??

কয়েক দিন আগে আপেল তাদের 16 সিরিজ লঞ্চ করলো।কিন্তু তারপরই Huawei Mate XTনামে এক ফোনের লঞ্চ ইভেন্ট হয়। সেই খবরই বা কত জন জানেন??

বলে রাখি এই Huawei mate xt ই হলো পৃথিবীর প্রথম tri - fold স্মার্টফোন। যেখানে samsung ও শুধু ফোল্ড বানায়।আর অ্যাপলের কথা নাহয় বাদ ই দিলাম তারা তো এখনো কোনো flip ফোনই বের করতে পারল না আর তো থাকল fold......

আজ হয়তো Huawei বহির বিশ্বে ছড়িয়ে নেই।কিন্তু তার নিজ দেশ চায়নায় খবর কি রেখেছেন একবার!?? ভেবে দেখেন কি!!মার্কেটে এত কোম্পানি থাকার পরও কি করে এই কোম্পানির ফোন চায়নায় প্রায় সকল মানুষের ভরসার কারণ হয়!?? প্রশ্নটা ছুঁড়ে দিলাম আপনাদের মধ্যে....

আজ এই পর্যন্তই থাক পরের বার নাহয় কথা বলব Huawei এর সাব-ব্র্যান্ড নিয়ে...

 


Tashrif Ahmed I'm a student of class 9.... SSC ²⁶