হুমায়ূন আহমেদ আপনি কোথায়?

Feb 7, 2025 - 00:05
Feb 15, 2025 - 01:01
 0  29
হুমায়ূন আহমেদ আপনি কোথায়?
internet

"নন্দিত নরকে" লেখার পর হয়তো হুমায়ূন আহমেদ কিছু একটা ভেবেছিলেন। সেটা বুঝতে তার ১৬ বছর সময় লেগেছিল। এই সময়টাতে আমরা যা হতে চেয়েছিলাম তার নাম হিমু, আর যা হতে পারিনি তার নাম মিসির আলী। আমাদের হিমালয় হওয়ার কথা ছিল, তাও পারিনি। এইসব ভাব আর বস্তুময়তার কথা। যার জন্ম হয়েছিল নর্থ ডাকোটা তে.. হুমায়ূন আহমেদ নর্থ ডাকোটা ইউনিভার্সিটিতে এতই ভালো  করেছিলেন যে শিক্ষক  হয়ে গেলেন। লেকচারার হিসেবে প্রথমদিকে সলভ ক্লাসগুলো তার দায়িত্বে পড়ল। প্রথম দিন স্যার ১ ঘন্টা লেকচার দিলেন। প্রবলেম সলভ করলেন। দীর্ঘ লেকচার শেষ হবার পর শেষ ১০ মিনিট থাকে প্রশ্ন পর্ব। তো স্যার বললেন, "Do you have any question? you can ask me now " ক্লাসে ৬০ জনের মতো ছেলেমেয়ে ছিলো। মাঝে বসা এক মেয়ে উঠে দাঁড়ালো। মেয়েটি স্যারের ভাষায় ভীষণ সুন্দরী। স্যার তো খুশি হয়ে গেলেন। সোনালি চুলের মেয়েটি স্যারকে বলল, ' can you explain the whole thing in English, please. The whole thing, you are talking about so far.' সবাই অট্টহাসিতে ফেটে পড়ল। স্যার ভীষণ লজ্জা পেলেন। সেদিন বাড়ি ফিরে তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, দেশে ফিরে যাবেন।

 সব খারাপের পেছনে ভালো আছে। চাঁদের একপাশে আলো, তো আরেক পাশে অন্ধকার। শুধু দেখার দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপার। তাকানোর দৃষ্টিকোণের বিষয়। হুমায়ূন আহমেদ স্যার তো "বলপয়েন্ট" নামক বইতে এই ঘটনাটি লিখেছিলেন। সেদিন ওভাবে মেয়েটি যদি তাকে সবার সামনে অপমান না করত, তিনি দেশে ফিরে আসতেন না। তাহলে হয়তো আমরা এতোবড় একজন লেখককে পেতাম না। হয়তো পেতাম, কিন্তু একটু অন্যভাবে। যদিও সেসময় তার পাঁচটি বই বাজারে ছিলো। ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত তার বিখ্যাত উপন্যাস "নন্দিত নরকে" বিক্রি হয়েছিল মাত্র ৬ কপি। তার ভাষায়, "আমার বইটি উল্টে দেখার সময়ও বাঙ্গালীর নেই। পড়া তো অনেক পরের ব্যাপার।" মাঝে মাঝে আমাদের সাথে খারাপ কিছু ঘটনা ঘটে। সব ঘটনার পেছনে প্রকৃতির কোন এক অজানা উদ্দেশ্য থাকে। কিছু কিছু ঘটনার মানে অনেক পরে বোঝা যায়। একবার ভাবি, কেমন হতো, যদি আমাদের ভার্সিটির কোন এক স্টুডেন্ট ক্লাসে দাঁড়িয়ে বলতো, 'স্যার, আপনার কথা কিছুই বুঝিনা। সামনের বেঞ্চের পোলাপানও আপনার কথা শুনতে পারেনা। কথা কইতে পারেননা, টিচার হবেন কেমনে? ' নিশ্চিত পরের দিন ওই ছেলের বারোটা বেজে যেতো। যাইহোক, আমরা আসলে খুব ভালো। আমাদের জাতি এরপরও আমাদের নিয়ে সন্তুষ্ট নয়। আসলে আমাদেরই ভুল। আমরা যদি ওই সোনালী চুলের মতো একটু অভদ্র হতাম, তাহলে হয়তো আরোও কিছু হুমায়ূন আহমেদের জন্ম হতো।