সম্রাট আকবর যুদ্ধ বিদ্যায় পারদর্শী হলেও নিরক্ষর ছিলেন

Jun 6, 2024 - 21:30
Jun 6, 2024 - 22:08
 3  53
সম্রাট আকবর যুদ্ধ বিদ্যায় পারদর্শী হলেও নিরক্ষর ছিলেন

মোগল সাম্রাজ্যের তৃতীয় ও শ্রেষ্ঠ সম্রাট ছিলেন জালালুদ্দিন  মুহাম্মদ আকবর। মাত্র তের বছর বয়সে বিশাল সাম্রাজ্যের দায়িত্ব গ্রহণ করে তিনি অর্ধশত বছর ভারত শাসন করেছেন। পৃথিবীর ইতিহাসে একজন সফল শাসক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলেও তিনি আসলে ছিলেন নিরক্ষর। তার সাম্রাজ্যের সরকারি ভাষা ফারসি হলেও তিনি ফারসি, আরবি কিংবা হিন্দুস্থানি কোন ভাষাই লিখতে ও পড়তে পারতেন না।

কিন্তু লিখতে পড়তে না পারলেও সম্রাট আকবর অশিক্ষিত ছিলেন না। বরং তিনি তার সময়ে প্রচলিত সকল বিদ্যাই আয়ত্ব করেছিলেন। ঐতিহাসিক বিবরণ মতে সম্রাট আকবর প্রায় দশজন শিক্ষকের নিকট বিদ্যা শিক্ষা করেছিলেন। তার প্রথম শিক্ষক ছিলেন মোল্লাজাদা মোল্লা আসামুদ্দীন। দ্বিতীয় শিক্ষক ছিলেন মৌলানা বায়জিদ। এভাবে মৌলানা আব্দুল কাদির, মুনিম খাঁ, খাজা আব্দুস সামাদ, আব্দুল লতিফ প্রমূখ।

মুনিম খাঁ আকবরকে শেখাতেন অস্ত্র বিদ্যা, আব্দুস সামাদ চিত্রাঙ্কন বিদ্যা। মির আব্দুল লতিফকে আকবরের প্রিতা সম্রাট হুমায়ুন সুদূর  ইরানের শিরাজ শহর থেকে সাহিত্য ও নীতিবিদ্যা শিক্ষাদানের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কিন্তু তার ভারতে আগমনের পূর্বেই সম্রাট হুমায়ুন মারা যান। এ মহৎ শিক্ষকের নিকট আকবর দিওয়ান-ই-হাফিজ পড়েছিলেন। তিনিই আকবরকে সকলের সাথে শান্তি ও সাম্যের পাঠ দিয়েছিলেন যা আকবরের সাফল্যের অন্যতম মূল কারণ ছিল। মুনিম খাঁর অস্ত্র বিদ্যায় আকবর তার জীবনের প্রায় সকল যুদ্ধেই জয়লাভ করেছিলেন।

আকবরের শিক্ষকদের সংখ্যা  নয়-দশ জনের কম ছিল না। এসব মহাপণ্ডিত আকবরকে প্রায় এক যুগ ধরে তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক জ্ঞানে সমৃদ্ধ করে তুলেছিলেন। আকবর নিজেও ছিলেন অবিশ্বাস্য স্মৃতিশক্তির অধিকারী। কিন্তু দশজন শিক্ষকের বার বছরের চেষ্টাতেও প্রখর স্মৃতিধর আকবর ফারসি বর্ণমালার মাত্র  ৩২ টি অক্ষর আয়ত্ব করতে পারেননি। কেউ কেউ বলেন, আকবর আসলে লিখতে পড়তে পারতেন। কিন্তু তাকে ইতিহাসের রহস্যপুরুষ বানানোর জন্যই তার সভাসদগণ তাকে নিরক্ষররূপে প্রকাশ করতেন। কেউ কেউ বলতেন, তিনি রাজ্য শাসন, যুদ্ধবিদ্যা ইত্যাদিকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করলেও ভাষা শিক্ষাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেননি। তবে নিরক্ষর হলেও আকবর ইতিহাসের পাতায় মহামতিরূপেই প্রসংশিত।


মোঃ আব্দুর রাজ্জাক জনাব মোঃ আব্দুর রাজ্জাক এর জন্ম রংপুর জেলায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিত ও অপরাধ বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর। পেশায় একজন পুলিশ অফিসার। বর্তমানে ৪ এপিবিএন, বগুড়ার অধিনায়ক