দেহ ধারণ করলেই কি মানুষ হওয়া সম্ভব?

আলোচ্য বিষয়ঃ দেহ ধারণ করলেই কি মানুষ হওয়া সম্ভব?
মানুষ শব্দের প্রকৃত অর্থ প্রকাশ হয়ে গেলে এই জগত সংসারে কারো আর অস্তিত্ব থাকবে না। এই জগত সংসারে প্রত্যেক ধর্মেই মানুষকে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে বলা হয়েছে। এই কথাটি ধর্মে বলা হয়েছে মানুষের পরিচয় তুলে ধরার জন্য। কিন্তু আমরা লোক-সমাজ এই মানুষ শব্দের প্রকৃত অর্থ না বুঝেই, না জেনেই নিজেদের মানুষ বলে আখ্যায়িত করে থাকি।
স্বয়ং স্রষ্টা আত্মা সৃষ্টি করার পর দেহে তা প্রবেশ করিয়ে দিয়েছেন। সাথে এই দেহে দিয়েছেন খান্নাস যুক্ত (নফস) কে। যার অনুসারি হওয়াই আমরা নিজেকে মানুষ হিসেবে তৈরি করতে পাচ্ছি না। এখানে একটি প্রকৃত সত্য কথা না বললেই নয় তা হলোঃ বিদ্যা অর্জনের দ্বারা কোনো দিনই মানুষ হওয়া সম্ভব নয়। প্রকৃত মানুষ হতে হলে একজন ধর্ম গুরু’র চরণ ধরা জরুরি। একমাত্র গুরু বা ইশ্বর বা প্রভু’র দয়া এবং কৃপা করলেই ধ্যান-সাধনা’র মধ্য দিয়ে নিজের দেহে বসবাসকারী ষড়রিপুকে বিসর্জন দিয়ে স্বয়ং পরমাত্মাকে চিনতে পারলেই প্রকৃত মানুষ হওয়া সম্ভব। ষড়রিপু’র অর্থ হলোঃ ছয় চরম শত্রু। এই ছয় শত্রু হলোঃ কাম, ক্রোধ, লোভ, মদ, মোহ ও মাৎসর্য। এই ছয়টি যার দেহে বসবাস করে সে কখনোই প্রকৃত মানুষ হতে পারে না। সহজকথায়, আমাদের মধ্যে যত রিপু রয়েছে সকল রিপুকে ত্যাগ করলেই প্রকৃত মানুষ হওয়া সম্ভব।
R প্রকৃত মানুষ সর্বদাই যা যা করতে পারেঃ---
- নিজেকে সবসময় অন্যের থেকে ছোট মনে করে,
- আমিত্ব বর্জন করার চেষ্টা করে,
- অন্যের সর্ম্পকে সমালোচনা না করে আত্মসমালোচনা করে,
- সকলের সাথে ভক্তি ও ভালোবাসার দ্বারা সময় অতিবাহিত করে,
- সকল নারীকেই নিজের মা সমতুল্য মর্যাদা প্রদান করে,
- প্রয়োজনের অতিরিক্ত চাওয়া-পাওয়া থাকে না ইত্যাদি ...
R প্রকৃত মানুষ কখনোই যা যা করতে পারে নাঃ---
- নিজের আমিত্ব প্রকাশ,
- জগত সংসারের যেকোন বিষয়-বস্তুর প্রতি মায়া,
- অর্থ-সম্পদের প্রতি (প্রয়োজন ব্যাতিত) অতিরিক্ত লোভ,
- নারীর দেহের প্রতি (বংশ বিস্তার ব্যাতিত) অতিরিক্ত যৌন চাহিদা,
- প্রয়োজনের অতিরিক্ত প্রাপ্তির কামনা-বাসনা,
- নিজেকে অন্যের তুলনায় বড় মনে করা,
- হিংসা-অহংকার-অহমিকা করা,
- আত্ম-সমালোচনা না করে অন্যের সমালোচনা করা,
- ক্ষমতার অপব্যবহার ইত্যাদি ...
তারিখঃ ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ইং